ব্রেকিং:
হামাসের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত দেশজুড়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর দেশজুড়ে যেসব কার্যালয়-স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর-আগুন ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে প্রতিটি হত্যার বিচার হবে, একটু সময় দিন: সেনাপ্রধান ১১টার মধ্যে শহীদ মিনারে জড়ো হতে বললেন আসিফ মাহমুদ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শহীদ মিনারে স্লোগান দিচ্ছেন রিকশাচালকেরাও শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে বাস চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের গেজেট প্রকাশ পুরো আগস্ট কালো ব্যাচ পরতে হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের
  • রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে বাংলাদেশের ‘পিএনসি’ হতে চায় বিএনপি

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২৪  

মালদ্বীপের রাজনীতিতে পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস বা পিএনসি একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। এই দলের প্রধান মোহাম্মদ মুইজ্জু এবার নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করেছেন। প্রেসিডেন্ট পদে তিনি অভিষিক্ত হননি। পার্লামেন্টে তিনি নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছেন। পিএনসির এই উত্থানের পিছনে চীনের সরাসরি সমর্থন রয়েছে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

মালদ্বীপের রাজনীতিতে চীনের সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ এসেছে পিএনসির মাধ্যমে। পিএনসি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে নিজেদেরকে চীনপন্থী রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং প্রকাশ্য ভারত বিরোধিতা করেছে। মোহাম্মদ মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই ভারতীয় সেনাদের মালদ্বীপ থেকে প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। চীনের সঙ্গে তিনি প্রকাশ্য সম্পর্ক করেছেন।

পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের উত্থানের পিছনে চীনের অর্থ এবং সহযোগিতার কথা সর্বজনবিদিত। আর এ কারণেই মালদ্বীপের রাজনীতিতে এখন সরাসরি দুটি ভাগ। একটি চীনপন্থী রাজনৈতিক দল, অন্যটি ভারতপন্থী রাজনৈতিক দল। এবারের নির্বাচনে ভারতপন্থীরা চীনপন্থীদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে।

মালদ্বীপের এই মডেলই অনুসরণ করতে চায় বিএনপি। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি প্রকাশ্যে ভারত বিরোধিতা করে চীনের একান্ত অনুগত এবং বিশ্বস্ত রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আর এ কারণেই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। বিএনপিতে যারা চীনপন্থী আছে তাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়েছে এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ইতোমধ্যে যোগাযোগও শুরু করেছে দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি ক্ষমতার বাইরে থাকা এই দলটি।

বিএনপির মধ্যে এক সময় চীনপন্থীদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। বিএনপির বহিষ্কৃত প্রয়াত মহাসচিব মান্নান ভূঁইয়া, প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলামসহ বহু নেতা ছিলেন সরাসরি চীনপন্থী। চীনের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা সকলেই জানত। ভারত বিরোধিতা করা এবং চীনপন্থাকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করার কাজটি বিএনপি করেছিল বেশ নিষ্ঠার সঙ্গেই। কিন্তু ২০০৮ এর নির্বাচনের পর সব হিসাব নিকাশ পাল্টে যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারসাম্যের কূটনীতি চালু করেন। তাতে তিনি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের পরিধি যেমন বাড়িয়েছেন, তেমনই চীনের সঙ্গেও অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কও বৃদ্ধি করেছেন। নেতৃত্ব শূন্য বিএনপি থেকে তাই মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চীন এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য বেশি আগ্রহী।

গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর অবস্থানের বিরুদ্ধে চীন আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিল। চীন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি বিশ্ব রাজনীতিতে প্রায় এতিম এবং দেউলিয়া হয়ে গেছে। গত নির্বাচনের আগে তারা পুরোপুরি ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের কথায় তারা সব কিছু করত। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত তাদেরকে সহযোগিতা করেনি। বিএনপিকে ছাড়াই যে নির্বাচন হয়েছে, সেই নির্বাচনকেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছে। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক আলগা হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র এখন বিএনপিকে এড়িয়ে চলার নীতি গ্রহণ করেছে।

এরকম বাস্তবতায় বিএনপি এখন চীনকেই তাদের মুরব্বি ভাবার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। চীনের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বিএনপিকে তারা ব্যবহার করতে দেওয়ার ব্যাপারেও ভাবছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস যেমন চীনের অর্থায়নে পরিচালিত হয়, বিএনপিও সে রকম চীনের কাছ থেকে আর্থিক এবং নৈতিক সাহায্য চাইছে।

তবে মালদ্বীপ এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা এক নয়। মালদ্বীপের মতো বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল একক দেশের ওপর নির্ভরশীল নয়। বরং আওয়ামী লীগের কূটনীতির প্রধান বিষয় হলো ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’। এই বাস্তবতায় বিএনপির চীন নীতি কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে।