ব্রেকিং:
হামাসের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত দেশজুড়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর দেশজুড়ে যেসব কার্যালয়-স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর-আগুন ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে প্রতিটি হত্যার বিচার হবে, একটু সময় দিন: সেনাপ্রধান ১১টার মধ্যে শহীদ মিনারে জড়ো হতে বললেন আসিফ মাহমুদ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শহীদ মিনারে স্লোগান দিচ্ছেন রিকশাচালকেরাও শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে বাস চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের গেজেট প্রকাশ পুরো আগস্ট কালো ব্যাচ পরতে হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের
  • রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাদেরকে নিয়ে টালমাটাল আওয়ামী লীগ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২৪  

টানা তিন বারের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। দলে তার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতির পরপরই। সারাদিনই দলীয় কার্যালয়ে কিছু না কিছু বলেন। সংবাদ সম্মেলন করে নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখাকে তিনি রীতিমতো একটি রেওয়াজে পরিণত করেছেন। কিন্তু সেই ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগে এখন নানা রকম অস্বস্তি এবং প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। 

 

ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগের এই বেহাল দশা কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন দলের কর্মীরা। তারা ওবায়দুল কাদেরের অতিকথনের সমালোচনাও করছেন। আর সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে আত্মসমালোচনা চলছে। বিশেষ করে কোটা আন্দোলন যখন সহিংসতায় রূপ নেয় তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যেভাবে মাঠে নামার কথা ছিল সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সেটা করতে পারেনি। আর এ নিয়ে দফায় দফায় আত্মসমালোচনা হচ্ছে আওয়ামী লীগে। প্রতিদিনই আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন নেতাদের নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু এই সমস্ত বৈঠকগুলোতে প্রায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। গতকালও আওয়ামী লীগের আত্মসমালোচনামূলক বৈঠকে হইচই হট্টগোল হয়েছিল। অনেকে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান পর্যন্ত দেয়। এরকম পরিস্থিতিতে সংগঠনকে পুনর্বিন্যাস করা, সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে অনেকে গুরুত্ব দিয়েছেন। 

ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে প্রশ্নগুলো এবং সমালোচনাগুলো উঠেছে তার মধ্যে রয়েছে;

 

১. অতিকথন: ওবায়দুল কাদের অতিকথন করেন। সারাক্ষণই তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন এবং এ সমস্ত কথাবার্তার মধ্যে অনেক সময় মাত্রা জ্ঞান ঠিক থাকে না। যার ফলে জনমনে অস্বস্তি হয়। এ কারণে তার কথার লাগাম টেনে ধরা উচিত বলে অনেকে মনে করেন।

 

২. সিনিয়র নেতাদেরকে পাত্তা না দেওয়া: অনেকেই বলছেন যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অনেক চৌকস জনপ্রিয় এবং মাঠের নেতা রয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকেই কথা বলতে দেওয়া হয় না। প্রতি সংবাদ সম্মেলনে কেন ওবায়দুল কাদেরকে কথা বলতে হবে। সব বিষয়ে তিনি কেন সংবাদ সম্মেলন করবেন- এই প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই। বিশেষ করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তখন দেখা গেছে যে, সৈয়দ আশরাফ কথা বলতেন কম, অধিকাংশ সময় কথা বলতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এখন সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। কোনও নেতাকেই কোনও স্পেস দেওয়া হয় না। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। 

 

৩. সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না: ওবায়দুল কাদেরের বড় সমস্যার বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যে, তিনি ঠিকমতো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। উদাহরণ হিসাবে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রসঙ্গ নিয়ে কথা উঠেছে। এই কমিটিগুলো জমা দেওয়া হয়েছে, কমিটির বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। টাকা নিয়ে অডিও রেকর্ড পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপরও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। তিন বছর হতে চলল ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের কোনও কমিটি হয় না। সাধারণ সম্পাদকের কারণে সারাদেশে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি কোন্দল দানা বেঁধে উঠছে বলে অনেকে মনে করেন। যদি তিনি নির্লিপ্ত না থাকতেন, উদাসীন না থাকতেন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারতেন তাহলে এই পরিস্থিতি গুলো হতো না বলে অনেকে মনে করেন। 

 

৪. কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই: ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কর্মীদের যোগাযোগ নেই। তিনি দলীয় কার্যালয়ে আসেন। কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেন, আবার চলে যান। কর্মীদের সাথে অনেক সময় তার রূঢ় ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে। কর্মীরা বলছেন যে, সাধারণ সম্পাদক যদি কর্মীদের সঙ্গে কথা না বলেন তাহলে তিনি কিভাবে দল চালাবেন।

 

৫. সবকিছুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকা: ওবায়দুল কাদের কথা যেমন বেশি বলেন তেমনি সব সিদ্ধান্তের জন্য তাকিয়ে থাকেন আওয়ামী লীগ সভাপতির দিকে। নিজে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। ফলে দলের নেতা এবং কর্মীরাও জাননে না দলের নির্দেশনা কি। উদাহারণ হিসেবে বলা হচ্ছে কোটা আন্দোলনের পর এখন যে পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতিতে করণীয় কি সে ব্যাপারে ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনও দিক নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন দলের দায়িত্ব পালন করেছেন ওবায়দুল কাদের। এক সময় ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা হিসেবে তিনি সন্মানের জায়গায় আছেন কিন্তু অনেকে মনে করেন যে, এখন সময় হয়েছে, ওবায়দুল কাদের দলকে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিতে পারছেন না। এই বিষয়টি এখন আওয়ামী লীগের ভেতরেই বড় হয়ে সামনে এসেছে।