ব্রেকিং:
হামাসের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত দেশজুড়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর দেশজুড়ে যেসব কার্যালয়-স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর-আগুন ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে প্রতিটি হত্যার বিচার হবে, একটু সময় দিন: সেনাপ্রধান ১১টার মধ্যে শহীদ মিনারে জড়ো হতে বললেন আসিফ মাহমুদ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শহীদ মিনারে স্লোগান দিচ্ছেন রিকশাচালকেরাও শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে বাস চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের গেজেট প্রকাশ পুরো আগস্ট কালো ব্যাচ পরতে হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের
  • রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘মামলাবাজ’ কৃষক লীগ নেতার কাছে জিম্মি ভিক্ষুক পরিবার

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৪  

চরম বিপদে পড়েছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কেরোয়া ইউনিয়নের দরিদ্র- অসহায় এক ভিক্ষুক পরিবার। দুই লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ওই পরিবারকে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যাওয়া বসতঘর নতুন করে করতে দিচ্ছেন না নজরুল ইসলাম নামে এক কৃষক লীগ নেতা।

এ ছাড়া জমিসংক্রান্ত প্রতারণা, ব্যক্তির, সরকারি জমি, পুকুর দখল, অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বললেই মিথ্যা মামলায় অতিষ্ঠ গরিব এলাকাবাসী। নজরুলের হয়রানি থেকে বাঁচতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন কেরোয়া ইউপি ওয়াজউদ্দিনপুল এলাকাবাসী।

রায়পুর কেরোয়া ইউপির কৃষক লীগের সাবেক যুগ্মসম্পাদক নজরুলের বিরুদ্ধে কথা বললেই গ্রামবাসীকে হামলার শিকার হতে হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে নজরুল ইসলাম ‘মামলাবাজ’ হিসেবে পরিচিত। তিনি রায়পুরের পূর্ব কেরোয়া গ্রামের নাপিতবাড়ির বাসিন্দা। এ ঘটনায় মামলাবাজ নজরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সহকারী পুলিশ সুপার কাছে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী।

২৪ শতাংশ জমি ওই অসহায় খদিজা বেগমের দখলে রয়েছে বলে সম্প্রতি নজরুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ করেন রায়পুর সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে। বুধবার সেই বিষয়ে শুনানি হলে নজরুলের অভিযোগ মিথ্যা এবং সেই সরকারি খাসজমি তার দখলে রয়েছে ও অসহায় ২০টি পরিবার বসবাস করছে বলে প্রমাণিত হয়।

বুধবার দুপুরে সরেজমিন পূর্ব কেরোয়া গ্রামের ওয়াজউদ্দিনপুল এলাকায় সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী পরিবারসহ শতাধিক নারী-পুরুষ জড়ো হতে থাকেন। তারা সরকারি খাসজমিতে গত ৫০-৬০ বছর বসবাস করে আসছেন।

এ সময় ওয়াজউদ্দিনপুল এলাকার সরকারি খাসজমিতে বসবাসকারী বৃদ্ধ খদিজা বেগম বলেন, ১৯৭৫ সালে সাবেক চেয়ারম্যান ওহিদ উদ্দিন হায়দার ভুঁইয়া আমিসহ ২০ পরিবারকে সরকারি খাসজমিতে বসবাস করার সুযোগ করে দিয়েছেন। কয়েক দিন আগে ঘূর্ণিঝড়ে বসতঘর ভেঙে যায়। তাই নতুন করে বসতঘর তুলছিলাম। এ সময় নজরুল ইসলাম তাদের পরিবারের জমি দাবি করে দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলেন। না দেওয়ায় থানায় ও এসিল্যান্ডের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছেন। এ চাঁদাবাজ ও মামলাবাজ নজরুলের হয়রানি থেকে বাঁচতে পুলিশ সুপারের সহযোগিতা চাই।

পুর্ব কেরোয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মো. হারুন (৫০), মো. ইউসুফ (৬০), জয়নাল হোসেন (৬০), আলমগীর হোসেন (৪৫), আবুল কালাম (৮০), কমলা বেগম (৫০), ফজরি বেগম (৩৫), নজরুল ইসলাম (৫৫) মসজিদ কমিটির সদস্য ইউসুফ আঠিয়া (৫৯), শাহজাহান (৬৫) ও স্বাস্থ্যকর্মী সুফিয়া আক্তার অরেন্জ (৪৮) সহ ২০ জন জানান, নজরুল ইসলাম হিরু খুব খারাপ ও মামলাবাজ। তিনি কেরোয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা, নাম বিক্রি করে মানুষকে হয়রানি করছেন এবং সবার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত।

কেরোয়া গ্রামের ওয়াজউদ্দিনপুল এলাকার মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ৭ শতাংশ জমিও তার— দাবি করেন নজরুল। এ জন্য আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে দেন। এতে নতুন ভবনের কাজও বন্ধ রয়েছে। পাশের একটি পুকুরও দখল করে রেখেছেন তিনি। 

বেকারি ব্যবসায়ী জসিম বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে এলাকার এক লোকের কাছ থেকে ৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে রেজিস্ট্রিও করেন। কিন্তু মামলাবাজ নজরুল তার জমি দাবি করে ১০ বছর ধরে দখল করে রেখেছেন। দখল বুঝে নিতে গেলেই মারধর করতে আসেন এবং মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকিও দিচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে নজরুল ইসলাম হিরু বলেন, ওয়াজউদ্দিনপুল এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি আমার পরিবারের অনেক সম্পদ দখল করে বসতবাড়ি তুলে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। যখনই জমির হিসাব চাইতে যাই, তখনই তারা মিথ্যা মামলাবাজ আখ্যায়িত দিয়ে একতাবদ্ধ হয়ে মারধর করতে আসেন। ফারুখ ডাক্তারসহ কয়েকজন আমাকে একবার মারধর করেন।

কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আরিফ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নজরুল ইসলাম হিরু আওয়ামী লীগের নাম বিক্রি করে চলছে। খুব খারাপ লোক। নিজের জমি দাবি করে অসহায় নিরীহ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। জমিসংক্রান্তসহ কয়েকটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। সবাইকে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে বলেছি।

সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী বলেন, গত বছর কেরোয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম হিরু নামে এক লোকের বিরুদ্ধে কয়েকজন গ্রামবাসী অভিযোগ করেছিলেন। তখন নজরুলকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। অপরাধীকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

রায়পুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাহেদ আরমান বলেন, ওই জায়গাটি সরকারি খাসজমি। নজরুলসহ ২০টি পরিবারের কাছে সরকারের অনেক জমি দখলে রয়েছে।